দখিনের খবর ডেক্স ॥ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের কাছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) শত শত কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। নানাভাবে তাগাদা দিয়েও ওই বিপুল পরিমাণ বকেয়া আদায় করা যাচ্ছে না। কোনো গ্রাহকের বিপরীতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাবদ ৩ মাসের বিল বকেয়া থাকলে তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু সরকারি দফতরগুলো বছরের পর বছর বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখছে। বিলখেলাপি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ চাইলে যে কোনো সময় বিচ্ছিন্ন করতে পারে পিডিবি। কিন্তু পিডিবি সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে বিভিন্ন সময় চিঠি দিয়ে বিল পরিশোধের তাগিদ দিচ্ছে। কিন্তু তারা বিল পরিশোধ করছে না। এ বিষয়ে পিডিবি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চেয়েছে। বিপিডিবি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদ্যুৎ বিল বাবদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কাছে বিপিডিবির পাওনা রয়েছে ৬৬৮ কোটি টাকা। তার মধ্যে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের কাছে সবচেয়ে বেশি পাওনা রয়েছে। তার পরই রয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বকেয়া বিল পরিশোধে ওসব বিভাগকে নানাভাবে তাগাদা দিচ্ছে পিডিবি।
সূত্র জানায়, সরকারের ৪৩টি মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে ৩৯টির কাছে বিদ্যুৎ ব্যবহার বাবদ বকেয়া বিলের পরিমাণ ৬৬৮ কোটি টাকা। ওসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের কাছে সর্বোচ্চ পাওনা রয়েছে ৯৭ কোটি টাকা। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়য়ের কাছে বকেয়ার পরিমাণ ৯৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। তৃতীয় শীর্ষ বিলখেলাপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তাদের কাছে পাওনা ৬৪ কোটি ৫৪ কোটি টাকা। ৫৭ কোটি টাকা বিল বকেয়া রেখে খেলাপিতে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ধর্ম-বিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর ৪৭ কোটি টাকা বকেয়া রেখে পঞ্চম খেলাপি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা মন্ত্রণালয়।
সূত্র আরো জানায়,বকেয়া বিল আদায়ের জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তার মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ বিল যথাসময়ে গ্রাহকের কাছে বিতরণ করা, বিলখেলাপি গ্রাহকদের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, বিল আদায়ের লক্ষ্যে টাস্কফোর্স গঠন করে অভিযানের ব্যবস্থা রাখা, পৌরসভা, ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, জুটমিলের মতো বড় গ্রাহকদের বকেয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আদায়ের পদক্ষেপ নেয়া। তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া বিল আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগ থেকে বিদ্যুৎ খাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে প্রয়োজনীয় অর্থের বরাদ্দ নিশ্চিত করা এবং সরকারি ও আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করা।
এ প্রসঙ্গে বিপিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ জানান, বকেয়া বিল আদায়ের জন্য বিপিডিবি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জন্য যে বরাদ্দ হয়, সেখানে বিদ্যুৎ বিলের জন্য আলাদা বরাদ্দ দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। যাতে ওই টাকা তারা অন্য খাতে ব্যবহার করতে না পারে।
Leave a Reply